রিজওয়ান বার্তা=২০১৮
আমরা ঐ সকল স্মরণীয় ঘটনাপ্রবাহের স্থায়ী গোধূলি-লগ্নে আপনাদের প্রতি শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করছি যা আশীষপূতঃ সুষমার জন্মের দ্বিশতবার্ষিকী উৎসবকে লক্ষণীয় করেছে। ঐ সময়ে এবং তখন থেকে যা ঘটেছে তা যখন আমরা বিবেচনা করি, তখন আমরা দেখতে পাই যে বিশ্বব্যাপী বাহা’ই সমাজ এখন দেখতে সেই সময়ের মত নেই যখন এটা বর্তমান পরিকল্পনার প্রথম ছয়টি কালচক্র শুরু করেছিল। এটা এখন নিজ উদ্দেশ্য সম্বন্ধে আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশী সচেতন। বন্ধু ও পরিচিত ব্যক্তিদেরকে এর সমাজ জীবনের সংস্পর্শে নিয়ে আসতে; মহল্লা ও গ্রামগুলোকে একতাবদ্ধ প্রচেষ্টায় অনুপ্রাণিত করতে; আধ্যাত্মিক সত্যতাগুলোকে সুষ্ঠু ব্যবহারিক কর্মে কিভাবে রূপান্তরিত করা যায় তা গ্রন্থিবদ্ধ করতে; এবং, সর্বোপরি, শুধু শিক্ষাসমূহ সম্বন্ধে নয় যা নতুন বিশ্ব গড়বে, বরং তাঁর সম্বন্ধে যিনি সেগুলো শিক্ষা দিয়েছেন: বাহাউল্লাহ সম্বন্ধে কথোপকথন করতে এর সামর্থ্যে এক অভূতপূর্ব বৃদ্ধি অনুভব করেছে। তাঁর জীবন সম্বন্ধে এবং তাঁর কষ্টভোগের বর্ণনাগুলো যা অগণিত ভাষায় বয়স্থ, যুব ও শিশুদের দ্বারা বলা হয়েছে তা অসংখ্য হৃদয়কে ছুঁয়ে গেছে। কয়েকজন নিজেরাই তাঁর ধর্ম অনুসন্ধান করার আগ্রহ প্রদর্শন করেছে। অন্যান্যরা সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এবং অনেক আশুগ্রাহী আত্মা বিশ্বাসের একটি ঘোষণার প্রতি চালিত হয়েছিল।
অনেক স্থান অগ্রগতির একটি উল্লেখযোগ্য নির্দেশক ছিল যেখানে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে ধর্ম প্রচ্ছন্নতা থেকে জাতীয় স্তরে আবির্ভূত হয়েছে। যেখানে সরকারী নেতাগণ ও বুদ্ধিজীবিগণ ছিলেন যারা প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়েছেন যেÑএবং কখনো কখনো ব্যক্তিগতভাবে গুরুত্ব আরোপ করেছেনÑবিশ্বের এখন বাহা’উল্লাহ্র দূরদৃষ্টির প্রয়োজন রয়েছে এবং বাহাইদের প্রচেষ্টাগুলো প্রশংসিত হয়েছে এবং প্রসারিত করতে হবে। এটা দেখতে পেয়ে আমরা আনন্দিত হয়েছি যে একমাত্র বাহাইগণ ছিল না যারা বাহা’উল্লাহকে শ্রদ্ধা জানাতে ও তাঁর জীবন উদযাপন করতে ইচ্ছা করেছিল বাহা’ই সমাজের বাইরে কয়েকজন দ্বারা বিশেষ সমাবেশগুলোর আয়োজন করা হয়েছিল।
এলাকাগুলোতে যেখানে ধর্মের প্রতি শত্রুতা বিদ্যমান, সেখানে বন্ধুগণ সংকল্পে অবিচল ছিলেন; বিষ্ময়কর প্রাণোচ্ছলতা প্রদর্শন করে, তারা তাদের স্বদেশবাসীকে নিজেদের পক্ষ থেকে সত্যতা অনুসন্ধান করতে উৎসাহিত করেন, এবং অনেকে আনন্দের সাথে উৎসবগুলোতে অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়াও দ্বিশতবার্ষিকী উৎসব শৈল্পিক অভিব্যক্তির আপাতদৃষ্টিতে সীমাহীন এক প্রস্ফুটনে উত্থান ঘটিয়েছে, ভালবাসার উৎসের প্রতি চমৎকার সাক্ষ্য যা থেকে এটা উদ্ভূত হয়েছে। এই উপলক্ষের প্রতি সমগ্র বাহাই সমাজের বৈশিষ্ট্য ছিল বিশ্বব্যাপী পরিকল্পনাসমূহের বর্তমান অনুক্রম শুরু হওয়া থেকে, এখন পর্যন্ত দুই দশকের বেশী সময় ধরে কতটা শেখা হয়েছে তার নিশ্চয়তা। ব্যক্তি বিশ্বাসী উদ্যোগ নিয়েছেন, সমাজ সম্মিলিত প্রচেষ্টায় উত্থিত হয়েছে এবং বন্ধুগণ তাদের সৃজনশীল শক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো কর্তৃক প্রণীত পরিকল্পনাসমূহে প্রণালীবদ্ধ করেছেন। একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্ষিকী, যা দুই শতাব্দীর গতিপথকে লক্ষণীয় করেছে, তা আগামী শতাব্দীগুলোর জন্য সমাজগুলো গড়ার কাজের প্রতি একটি শক্তিশালী উদ্দীপনা প্রদান করেছে। দ্বিতীয় দ্বিশতবার্ষিকী উৎসবের দিকে চালনাকারী সময়ে, এত প্রেমপূর্ণভাবে বপন করা প্রতিটি বীজকে এর ফলপ্রসূতার দিকে নিয়ে যেতে আসুন প্রথমে একে সহিষ্ণুতার সাথে প্রতিপালন করি।
বর্তমান পরিকল্পনায় দুই বছর, যদিও স্বাভাবিকভাবে অগ্রগতি এক দেশ থেকে অন্য দেশে সমান নয়, বিশ্বে নিবিড় বৃদ্ধির কার্যক্রমের সংখ্যা চলতি বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টায় প্রত্যাশা করা পাঁচ হাজারের অর্ধেকে পৌঁছতে যাচ্ছে, এবং যে হারে এই সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে তা দৃঢ়ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছিল। আরো মনোযোগ দিয়ে দেখা হলে, ব্যক্তিবর্গ, সমাজগুলো, এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর শক্তি ও সম্ভাবনাসমূহ যেভাবে প্রকাশিত হচ্ছে তার প্রতিশ্রুতিশীল লক্ষণসমূহ রয়েছে। কারণ সকল স্থানের বিশ্বাসীগণ, দ্বিশতবার্ষিকী উৎসব পালনের অভিজ্ঞতায় প্রদর্শন করেছেন যে তাদের চারপাশের লোকজনের সাথে তাদের দৈনন্দিন অনেক পারস্পরিক আলোচনাকে শিক্ষাদানের চেতনা দ্বারা সঞ্চারিত করা যেতে পারে। এবং হাজার হাজার গ্রাম ও মহল্লায় যখন কাজ ভরবেগ সঞ্চারিত করে, তখন প্রত্যেকটিতে একটি স্পন্দনশীল সামাজিক জীবন সুদৃঢ় হয়। যেখানে কার্যকলাপের এই আদর্শ প্রসারিত করার জন্য পদ্ধতিটি বেশী বেশী লোকালয়ে সু-প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ফলস্বরূপ, বন্ধুগণকে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় তৃতীয় মাইলফলকটি অতিক্রম করতে সক্ষম করছে সেখানে ক্লাস্টারগুলোর সংখ্যা লক্ষণীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এবং তা এখানে, বাহাই বিশ্বের শেখার সীমান্তগুলোতে, বিশেষভাবে বাহাউল্লাহর দূরদৃষ্টির দিকে জনগণের সঞ্চালনে, যেখানে কেবল বৃহৎ সংখ্যাগুলো বাহাই কার্যকলাপের প্রসারণশীল আলিঙ্গনে আসছে না বরং বন্ধুগণ এখন শিখছেন কিভাবে বড় আকারের দলগুলো পরম মহান নামের সমাজের সাথে নিজেদেরকে একাত্ম করছে। এইরূপ স্থানগুলোতে আমরা ধর্মের শিক্ষামূলক প্রচেষ্টাসমূহকে একটি অধিকতর আনুষ্ঠানিক বৈশিষ্ট্য গ্রহণ করতে দেখছি, যখন শিশুগণ বছরের পর বছর গ্রেডগুলোর মাধ্যমে নির্বিঘ্নে সঞ্চালিত হচ্ছে এবং জুনিয়র ইয়ুথ আধ্যাত্মিক ক্ষমতায়ন কার্যক্রমের একটি স্তর নির্ভরযোগ্যভাবে অপরটির অনুবর্তী হচ্ছে। এই সকল স্থানে, প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নিশ্চিত করতে শিখছে যে চির-বর্ধিষ্ণু সংখ্যায় শিশু ও জুনিয়র ইয়োথদের আধ্যাত্মিক ও নৈতিক উন্নতিসাধনের জন্য পর্যাপ্ত মানব সম্পদসমূহ গড়ে তোলা যায়। এই সকল ভিত্তিমূলক কার্যকলাপে অংশগ্রহণ জনসংখ্যার সংস্কৃতিতে এতই দৃঢ়ভাবে নিহিত যে একে একটি সমাজের জীবনের একটি অপরিহার্য দিক হিসাবে দেখা হয়। একটি জনসমষ্টির মধ্যে তাদের নিজেদের উন্নয়নের দায়িত্ব গ্রহণকারী একটি নতুন জীবনীশক্তি সুস্পষ্ট হয় এবং সেগুলো ঐ সকল সামাজিক শক্তির বিরুদ্ধে নিরাপত্তা গড়ে তোলে যা নিষ্ক্রিয়তার জন্ম দেয়। বস্তুগত ও আধ্যাত্মিক অগ্রগতির জন্য সম্ভাবনাগুলো সৃষ্টি হয়। সামাজিক বাস্তবতা রূপান্তরিত হতে শুরু করে।
প্রিয় বন্ধুগণ, পরম-প্রিয়তমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করার জন্য এটা সত্যিকারভাবে একটি মূহুর্ত। উৎসাহিত হওয়ার প্রচুর কারণ রয়েছে। তা সত্ত্বেও আমরা শুধু কাজের পরিমাণ সম্বন্ধে খুব বেশী সচেতন রয়েছি যা অবশিষ্ট রয়েছে। মৌলিকভাবে, পূর্বে আমরা যেরূপ জ্ঞাপন করেছি, বহু শত ক্লাস্টারে অবশ্যই বিশ্বাসীগণের একটি বর্ধিষ্ণু দল বেরিয়ে আসতে হবে যারা, তাদের চারপাশে যারা রয়েছে তাদেরকে নিয়ে, সযতেœ লালিত বৃদ্ধি ও বর্ধিষ্ণু সামর্থ্যের উপর একটি সুদৃঢ় মনোযোগ বজায় রাখতে পারে। প্রত্যেক জায়গায় ব্যক্তিগণের একটি প্রসারণশীল কেন্দ্রীয় অংশ গড়ে তোলা ও সহগামী হওয়া-কেবল ক্লাস্টার স্তরে নয় বরং মহল্লা ও গ্রামগুলোর মধ্যে-একই সময়ে একটি দুর্দান্ত চ্যালেঞ্জ এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন। কিন্তু যেখানে তা সংঘটিত হচ্ছে, সেখানে ফলাফলগুলোই তার প্রমাণ হয়ে আছে।
আমরা দেখতে পেয়ে আশ্বস্ত যে ধর্মের প্রতিষ্ঠানগুলো এই সর্বোচ্চ প্রয়োজনকে তাদের চিন্তার অগ্রভাগে রাখছেন, ব্যাপকভাবে প্রয়োগের জন্য অগ্রগতি থেকে উত্থিত অন্তর্দৃষ্টিগুলোকে সক্ষম করতে কার্যকর পদ্ধতিগুলো উদ্ভাবন করছেন। একই সময়ে, বৃহত্তর অভিজ্ঞতা জাতীয়, আঞ্চলিক ও স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনুরূপ প্রশস্ততর দূরদৃষ্টি দ্বারা ভূষিত করছে। তারা সমাজের উন্নয়নের সকল দিকে সম্পৃক্ত হচ্ছে এবং এর আনুষ্ঠানিক সদস্যতা ছাড়িয়ে জনগণের কল্যাণের সাথে সংশ্লিষ্ট হচ্ছেন। জনগণের অগ্রগতির জন্য ইনস্টিটিউট প্রক্রিয়া যে গভীর তাৎপর্য রাখে সে বিষয়ে সচেতন থেকে, কিভাবে প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটকে শক্তিশালী করা যেতে পারে সেদিকে তারা বিশেষ মনোযোগ দিচ্ছেন। পরিকল্পনার প্রয়োজনগুলোর উপর সমাজের মনোযোগ এবং বন্ধুদের সদা-প্রসারণশীল চক্রের প্রতি একতার আরো উচ্চতর স্তরগুলোর আহ্বান বজায় রাখার প্রয়োজন সম্বন্ধে তারা সচেতন রয়েছেন। তারা বিশ্বস্ততার সাথে তাদের প্রশাসনিক ও আর্থিক পদ্ধতিগুলো পরিমার্জন করতে তাদের দায়িত্বগুলো সমুন্নত রাখছেন যেন প্রসারণ ও দৃঢ়করণের কাজে যথাযথভাবে সাহায্য করা যায়। এই সকল কাজে, তারা সমাজের মধ্যে ঐ অবস্থাগুলো সৃষ্টি করতে চূড়ান্তভাবে নিয়োজিত রয়েছেন যা শক্তিশালী আধ্যাত্মিক বাহিনীসমূহ বিমুক্ত করার প্রতি সহায়ক।
সমাজ গড়ার কাজ যখন তীব্র হচ্ছে, তখন বন্ধুগণ তাদের চারপাশের সমাজে অবস্থাগুলো উন্নত করতে তাদের গড়ে তোলা নতুন সামর্থ্যগুলো, ঐশ্বরিক শিক্ষাসমূহ সম্বন্ধে তাদের অধ্যয়ন দ্বারা প্রজ্বলিত তাদের উদ্দীপনা ব্যবহার করছেন। স্বল্প-মেয়াদী প্রকল্পগুলো সংখ্যায় বৃদ্ধি পেয়েছে, আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমগুলো তাদের পরিসর প্রসারিত করেছে, এবং এখন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, ও অন্যান্য ক্ষেত্রে অধিক সংখ্যক বাহাই-অনুপ্রাণিত উন্নয়ন সংগঠনগুলো নিয়োজিত রয়েছে। জনগণের ব্যক্তিক ও সম্মিলিত জীবনে দৃশ্যমান রূপান্তরের ফলাফল থেকে বাহাউল্লাহর ধর্মের সমাজ গড়ার ক্ষমতার সুস্পষ্ট আলোড়নগুলো দেখা যেতে পারে। অতঃপর, এতে অবাক হবার কিছু নেই যে এটা সামাজিক কর্মের এইরূপ উপলক্ষগুলো থেকে-হোক তা সরল বা জটিল, নির্ধারিত সময়ের বা দীর্ঘ-সময়ব্যাপী-যা বাহাই আন্তর্জাতিক সমাজের কার্যালয়গুলো সমাজের বিদ্যমান আলোচনাগুলোতে অংশগ্রহণ করতে তাদের প্রচেষ্টাগুলোতে বর্ধিষ্ণুভাবে অনুপ্রেরণা লাভ করছে। এটা ধর্মের জন্য প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র যা বেশ ভালভাবে এগিয়ে গেছে। জাতীয় স্তরে, আলোচনা সভাসমূহের প্রতি অবদানগুলো যা ঐ সমাজের প্রতি অর্থপূর্ণ নারী ও পুরুষের সমানাধিকার, অভিবাসন ও একাঙ্গীকরণ, সামাজিক রূপান্তরে যুবদের ভূমিকা, এবং ধর্মীয় সহাবস্থান, অন্যান্যগুলোর মধ্যে রয়েছে-তা আত্মবিশ্বাস, দক্ষতা, ও অন্তর্দৃষ্টির সাথে করা হচ্ছে। এবং তারা যেখানেই বসবাস, কাজ, বা অধ্যয়ন করছে, সকল বয়স ও পটভূমির বিশ্বাসীগণ বিশেষ আলোচনা সভাগুলোর প্রতি মূল্যবান অবদান রাখছেন, যারা তাদের চারপাশে রয়েছে তাদের মনোযোগের প্রতি বাহাউল্লাহর বিশাল প্রত্যাদেশ দ্বারা গঠিত নীতিগত দৃষ্টিকোন নিয়ে আসছেন।
বিভিন্ন স্থানে যেখানে আলোচনা সভাগুলো উন্মোচিত হয়েছে সেখানে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবে এর অফিসিয়াল উপস্থিতি দ্বারা ধর্মের অবস্থান অনেক উন্নত হয়েছে, একটি উপস্থিতি যা অসংখ্য জাতীয় বাহাই ওয়েবসাইটের চালু হওয়া এবং বাহাই.অর্গ এর সাথে সংশ্লিস্ট সাইটগুলোর পরিবারের আরো উন্নয়নের মাধ্যমে যথেষ্ট প্রসারিত হয়েছে। তে ধর্মের প্রচার ও সংরক্ষণ উভয়ের জন্য অপরিমেয় মান রয়েছে। মাত্র কয়েক দিনের ব্যাপ্তিতে ধর্ম সম্বন্ধে সযতেœ ধারণাকৃত বিষয়বস্তুর প্রতি বিশ্বব্যাপী একটি বৃহৎ পাঠকসাধারণকে আকৃষ্ট করেছিল যা দ্বিশতবার্ষিকী উৎসব ওয়েবসাইটে উপস্থাপন করা হয়েছিল এবং একইসময়ে নয়টি ভাষায় হালনাগাদ করা হয়েছিল এবং উদ্যাপনগুলো যা ঘটেছিল তার বৈচিত্র ব্যাখ্যা করে এখন তা স্বতন্ত্র দেশের ওয়েব পেজগুলো দ্বারা উদ্দীপিত করা হয়েছে। বাহাই রেফারেন্স লাইব্রেরী সাইটের প্রতি একটি বৈশিষ্ট্য উপস্থাপনের জন্য পরিকল্পনাসমূহ ইতিমধ্যে বেশ এগিয়ে গেছে যা একটি সময়ের পরে পবিত্র লিখনাবলী থেকে পূর্বে অন-অনূদিত ও অপ্রকাশিত অনুচ্ছেদ বা ফলকলিপিসমূহ অনলাইনে বিমুক্ত করতে দেবে এবং তা, আগামী বছরগুলোতে বাহাউল্লাহ ও আব্দুল-বাহার ইংরেজী ভাষায় অনূদিত নতুন পুস্তকগুলো আবির্ভূত হওয়ার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
সান্টিয়াগো, চিলি, এবং বাত্তামবাং, ক্যাম্বোডিয়ায়, বিশ্বের অতি সম্প্রতি উৎসর্গিত উপাসনালয়গুলো আকর্ষণের প্রতিষ্ঠিত কেন্দ্রগুলোতে পরিণত হচ্ছে, তাদের সকলের সমাজগুলোর প্রতি ধর্মের প্রধান উদ্দেশ্য সম্বন্ধে পথনির্দেশ দিচ্ছে। এবং সেগুলোর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে যাচ্ছে। আমরা ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিত যে কলম্বিয়ার নর্টে ডেল কোকায় উপাসনালয়ের জন্য উৎসর্গ অনুষ্ঠানটি জুলাই মাসে সংঘটিত হবে। এ ছাড়াও, আরো উপাসনালয়ের নির্মাণ কাজ নাগালের মধ্যেই রয়েছে। ভানুয়াতুতে, নির্মাণ কাজ শুরু করার জন্য অনুমতি নেয়া হচ্ছে। ভারত ও গণ প্রজাতন্ত্রী কঙ্গোতে, একটি অত্যন্ত জটিল ও যথোপযুক্ত প্রক্রিয়া শেষ পর্যন্ত সফল ভূমি অধিগ্রহণের দিকে চালিত করেছে। পাপুয়া নিউ গিনিতে নওরোজে উন্মোচিত প্রথম জাতীয় মাশরিকুল-আযকারের নকশা দেখার আনন্দ তখনো মিলিয়ে যায় নাই যখন কেনিয়ায় স্থানীয় উপানসালয়ের নকশাও উদ্ঘাটিত হয়েছিল। ইতিমধ্যে, আমাদের প্রত্যেক প্রত্যাশা রয়েছে যে আমাদের গবেষণা বিভাগ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত, মাশরিকুল-আযকারের প্রতিষ্ঠান সম্বন্ধে সম্প্রতি প্রকাশিত বিবৃতি ও সংকলন, সমাজ জীবনে উপাসনার গুরুত্ব সম্বন্ধে বন্ধুদের উপলব্ধি আরো উদ্দীপিত করবে। কারণ তাদের সেবার কর্মগুলোতে, বিশেষভাবে তাদের নিয়মিত ভক্তিমূলক সমাবেশগুলোতে, সকল স্থানের বাহাইগণ ভবিষ্যৎ উপাসনালয়সমূহের আধ্যাত্মিক ভিত্তিগুলো স্থাপন করছেন।
এক চতুর্থাংশ-শতাব্দী প্রচেষ্টার মাত্র তিন বছর অবশিষ্ট রয়েছে যা ১৯৯৬ সালে শুরু হয়েছিল যা একটি অভিন্ন লক্ষ্যের উপর নিবদ্ধ: দলে দলে যোগদানের প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। রিজওয়ান ২০২১ এ, বাহাউল্লাহর অনুসারীগণ একটি এক-বছর ব্যাপী পরিকল্পনা শুরু করবেন। সংক্ষিপ্ত, কিন্তু পূর্বলক্ষণ দ্বারা পূর্ণ, এই এক-বার্ষিক প্রচেষ্টা পরিকল্পনাসমূহের একটি নতুন তরঙ্গ শুরু করবে যা ধর্মের জাহাজকে বাহাই যুগের তৃতীয় শতাব্দীতে নিয়ে যাবে। এই শুভলক্ষণযুক্ত বারো মাসের কার্যপরম্পরার সময়, আব্দুল-বাহার স্বর্গারোহণের শতবার্ষিকী উপলক্ষে বাহাই বিশ্বের স্মৃতি উদ্যাপন বাহাই বিশ্ব কেন্দ্রে একটি বিশেষ সমাবেশকে অন্তর্ভূক্ত করবে যেখানে প্রত্যেক জাতীয় আধ্যাত্মিক পরিষদ ও প্রত্যেক আঞ্চলিক বাহাই কাউন্সিলের প্রতিনিধিগণকে নিমন্ত্রণ করা হবে। যদিও, এটা ঘটনাবলীর পরম্পরায় প্রথমটি হবে যা বিশ্বাসীগণকে আগামী দশকগুলোর চাহিদার জন্য প্রস্তুত করবে। পরবর্তী জানুয়ারী মাসে, মাস্টারের ইষ্টিপত্র প্রথমবার প্রকাশ্যে পাঠ করার পর থেকে একশত বছর অতিবাহিত হওয়া পবিত্র ভূমিতে একটি সম্মেলনের জন্য উপলক্ষ হবে যা মহাদেশীয় বোর্ডের উপদেষ্টাগণ এবং সংরক্ষণ ও প্রচারের জন্য অক্সিলারী বোর্ডের সকল সদস্যগণকে একত্রে নিয়ে আসবে। এই দুইটি ঐতিহাসিক সমাবেশ থেকে বিমুক্ত আধ্যাত্মিক শক্তি তখন ঈশ্বরের বন্ধুদের দ্বারা অবশ্যই প্রতিটি ভূ-খনডে বাহিত হবে যেখানে তারা বাস করেন। এই উদ্দেশ্যের জন্য, তার পরবর্তী মাসগুলোতে বিশ্বব্যাপী সম্মেলনগুলোর একটি পরম্পরার আহ্বান করা হবে, যা বহু-বার্ষিক প্রচেষ্টার প্রতি একটি অনুঘটক হবে যা আগামী এক-বার্ষিক পরিকল্পনার অনুবর্তী হবে।
এভাবে, মাস্টারের ঐশ্বরিক পরিকল্পনায় একটি নতুন পর্যায় এগিয়ে আসছে। কিন্তু একটি রোমাঞ্চকর ও আরো তাৎক্ষণিক প্রত্যাশা সরাসরি সম্মুখে রয়েছে। বাবের জন্মের দ্বিশতবার্ষিকী উৎসব এখন মাত্র দেড় বছরের ব্যবধানে রয়েছে। এটা একটি সময় যখন আমাদের ধর্মের শহীদ-অগ্রদূতের অসাধারণ বীরত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, যার নাটকীয় কার্যকাল মানবজাতিকে ইতিহাসের একটি নতুন যুগে ঠেলে দিয়েছে। যদিও আমাদের নিজেদের সময় থেকে দুই শতাব্দী দ্বারা পৃথক, সমাজটি যার মধ্যে বাব আবির্ভূত হয়েছিলেন তা নিপীড়নের দিক দিয়ে এবং আত্মার তৃষ্ণা নিবারণ করতে উত্তরগুলো খুঁজে পেতে এত অধিক সংখ্যকের আকাঙ্খার জন্য বর্তমান কালের বিশ্বের অনুরূপ ছিল। কিভাবে এই দুই-শত-বছর বার্ষিকী যথোপযুক্তভাবে লক্ষণীয় করা যায় তা বিবেচনা করতে গিয়ে, আমরা স্বীকার করছি যে এই সকল উদ্যাপনের নিজস্ব একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তা সত্ত্বেও, আমরা কার্যকলাপের একটি জাঁকজমক প্রত্যাশা করছি যা ঐ উদ্যাপন থেকে কোনভাবে কম সমৃদ্ধ ও কম ব্যাপক হবে না যা সবে মাত্র ঘটে যাওয়া দ্বিশতবার্ষিকী উৎসবের সহগামী হয়েছিল। এ এক উপলক্ষ যার প্রতি প্রত্যেক সমাজ, প্রত্যেক পরিবার, প্রত্যেক হৃদয় নিঃসন্দেহে অধীর প্রত্যাশায় পথ চেয়ে থাকবে।
এ ছাড়াও আগামী মাসগুলো বাবের অকুতোভয় অনুসারীদের জীবনগুলো স্মরণ করার জন্য একটি সময় হবে–বীরগণ ও বীরাঙ্গনাগণ যাদের বিশ্বাস অতুলনীয়, ত্যাগের কর্মগুলোতে ব্যক্ত হয়েছিল যা চিরকাল ধর্মের বর্ষপঞ্জিগুলোকে অলঙ্কৃত করবে। তাদের নির্ভীকতা, উৎসর্গ এবং ঈশ্বর ব্যতীত অন্য সব থেকে নিরাসক্তির গুণাবলী-ই তাদের প্রত্যেককে প্রভাবিত করে যারা তাদের উদ্যোগগুলো সম্বন্ধে জেনেছে। এ ছাড়াও, কত লক্ষণীয় ছিল তরুণ বয়স যখন ঐ সকল সিংহ-হৃদয় ইতিহাসের উপর তাদের অমোচনীয় চিহ্ন সৃষ্টি করেছিলেন। আগামী দিনগুলোতে, তাদের উদাহরণ যেন বিশ্বস্তদের সম্পূর্ণ দলের প্রতি সাহস প্রদান করেÑÑতরুণদের প্রতি তা কম হবে না, যাদেরকে আরেকবার একটি আন্দোলনের অগ্রদূত হওয়ার আহ্বান করা হয়েছে যার লক্ষ্য বিশ্বের রূপান্তর অপেক্ষা কোনভাবেই কম নয়।
অতঃপর, এটা আমাদের উজ্জ্বল, উজ্জ্বল আশা। ছয়টি কালচক্র যা এই রিজওয়ান এবং পরবর্তী দ্বিশতবার্ষিকী উৎসবের মধ্যে রয়েছে — প্রকৃতপক্ষে, চলতি পরিকল্পনার অবশিষ্ট তিন বছর –একই সর্ব-গ্রাসকারী, সর্বাতিক্রমী ভালবাসা যা ঐশ্বরিক আলো বিকীর্ণ করতে বাবের শিষ্যদের অনুপ্রাণিত করেছিল তা যেন আপনাদেরকে মহান কাজগুলোর প্রতি অনুপ্রাণিত করে। পবিত্র দ্বারপ্রান্তে আমাদের সানুনয় প্রার্থনা হচ্ছে আপনারা যেন স্বর্গীয় সাহায্যের গ্রহীতা হতে পারেন।